প্রতি বছর ১৭ হাজার শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়
নদীমাতৃক দেশ, বাংলাদেশ৷ নদী বিধৌত এই দেশের গ্রামে প্রতিটি না হলেও বহু বাড়ির কাছাকাছি পুকুর থাকা খুবই স্বাভাবিক৷ আর খাল বিল তো রয়েছেই৷ তাইতো পা বাড়ালেই কোন জলাধার খুঁজতে খুব বেশি বেগ পেতে হয়না গ্রামের কোন অধিবাসীকেই৷ উপরন্ত এমন কোন বছর নেই যে বছর বন্যা আঘাত হানে না বাংলাদেশে৷ আর বন্যার পানিও নীচু এলাকায় জমে থাকে কয়েক সপ্তাহ কখনো বা মাসব্যাপী৷ পানির এই সহজলভ্যতার কারণেই সাঁতার না জানা বহু শিশু প্রতি বছর পানিতে ডুবে মারা যায় বাংলাদেশে৷
ইউনিসেফের সংগঠন সেন্টার ফর ইনজিউরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ বাংলাদেশ বা সিইপিআরবি বাংলাদেশী শিশুদের সাঁতার শেখানোর জন্য প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে ২০০৫ সাল থেকে৷ তাদের লক্ষ্য বাংলাদেশের প্রতিটি শিশুকে সাঁতার শেখানো ৷ যেনো পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর হার কমে আসে৷ এপর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের ৩০ হাজার শিশুকে সাঁতার কাটতে শিখিয়েছে৷
তাদের সহায়তা করছে অষ্ট্রেলিয়ান একটি বেসরকারি সংগঠন৷ সংগঠনটি তাদের বিশ্বখ্যাত প্রশিক্ষকদের বাংলাদেশে পাঠান বাংলাদেশের স্থানীয় সাঁতার প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিতে৷ প্রশিক্ষণ শেষে তারা নিজ গ্রামে চলে যান এবং বাচ্চাদের সাঁতারের প্রশিক্ষণ দেন৷
অষ্ট্রেলিয়ান এক সাঁতার প্রশিক্ষক জেস মস বার্তা সংস্থাকে বলেন, পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনা বাংলাদেশে খুবই বেশি৷ কিন্তু আমরা যদি একটি বাচ্চাকে শেখাতে পারি কিভাবে ৯০ সেকেন্ড সাঁতার কাটা যায় বা ভেসে থাকা যায় তবে তার জীবন রক্ষা করা সম্ভব৷
ইউনিসেফের স্বাস্থ্য এবং পুষ্টি বিভাগের বাংলাদেশ প্রধান ব্রিথ লোকেটেলি-রসি বলেন, তারা ৪ থেকে ১০ বছরের বাচ্চাদের সাঁতার প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন৷ যা বাচ্চাদের পানিতে ভেসে জীবন রক্ষা করতে সাহায্য করবে৷
কিন্তু এই বাচ্চাদের তো আর সুইমিংপুল করে সাঁতার শেখানো সম্ভব নয় ৷ তাই স্থানীয় জলাশয় বা পুকুরকেই প্রশিক্ষণের জন্য বেছে নিয়েছে ইউনিসেফ৷ যেখানে বাঁশের তৈরি গোলাকার বেড়া বাচ্চাদের নিরাপত্তার জন্য ব্যবহার করা হয়৷
প্রতিবেদক: ঝুমুর বারী
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক
তথ্যসূত্র: ডয়চে ভেলে/ ১৫-০৯-২০০৯