কিশোরীর শ্লীলতাহানির অপরাধে
হরিয়ানার প্রাক্তন পুলিশ প্রধানের দেড় বছর কারাবাস
অবশেষে ১৬ বছরের কিশোরী রুচিকা গীরহোত্রার শ্লীলতাহানির অপরাধে হরিয়ানা পুলিশের প্রাক্তন প্রধান এসপিএস রাঠোরের কারাবাসের মেয়াদ ৬ মাস থেকে বাড়িয়ে দেড় বছর করার আদেশ দেন চন্ডীগড়ের এক আদালত৷ সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে জেলহাজতে পাঠাবারও নির্দেশ দেন পুলিশকে৷
২০ বছর আগে চন্ডীগড়ের কাছে পাঁচকুলা শহরে ১৬ বছরের উঠতি টেনিস খেলোয়াড় রুচিকার শ্লীলতাহানি করেছিল হরিয়ানার সাবেক ডিজি এস পি এস রাঠোর৷ তারপরেও রাঠোরের লোকজন রুচিকাকে ক্রমাগত উত্ত্যক্ত করতো৷ মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে তার তিন বছর পর রুচিকা আত্মহত্যা করে৷ পুলিশ প্রধানের ভয়ে রুচিকার পরিবার তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে যেতে ভয় পান৷
রুচিকা পরিবারের বন্ধু আনন্দ প্রকাশ ও তাঁর মেয়ে আরাধনা ছিল সেসময় এই ঘটনাক্রমের সাক্ষী৷ রুচিকার অনাবাসী বান্ধবী আরাধনা দেশে ফিরে ১৮ বছর পর রাঠোরের বিরুদ্ধে মামলা করেন৷ কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরোর বিশেষ আদালত গত বছর ডিসেম্বরে রাঠোর কে ঐ অপরাধে ৬ মাস জেল ও হাজার টাকা জরিমানা করেন৷ রাঠোর সঙ্গে সঙ্গে জামিন পেয়ে যান৷ এত বড় ঘৃণ্য অপরাধে লঘু দন্ডের বিরুদ্ধে জনমানসে দেখা দেয় তীব্র অসন্তোষ৷ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলি সোচ্চার হয়ে ওঠে এই রায়ের বিরুদ্ধে৷ নতুন করে বিচার শুরু হয় সেশন কোর্টে৷ আজ মঙ্গলবারের রায়ে রাঠোরের কারাবাসের মেয়াদ বাড়িয়ে দেড় বছর করার রায় দেন অতিরিক্ত জেলা ও সেশন জজ৷ তাঁকে পুলিশী হেফাজতে নিয়ে জেলে পাঠাবার আদেশ দেন৷ পূর্বকার রায় চ্যালেঞ্জ করে রাঠোর যে আপীল করেছিলেন, তা খারিজ করে দেন বিচারক৷ অবশ্য এই রায়ের বিরুদ্ধে এখনও উচ্চ আদালতে আপীল করার সুযোগ আছে রাঠোরের৷
এই রায়ে রুচিকার বাবা এস. সি গীরহোত্রা খুশি ব্যক্ত করে বলেন, রাঠোরের বিরুদ্ধে রুচিকাকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করার অভিযোগে মামলা চলবে৷ আজকের রায় একথাই আবার প্রমাণ করলো, যত বড় প্রভাবশালী ব্যক্তিই হোক না কেন আইনের উর্দ্ধে কেউ নয়, – বলেন রুচিকার বাবা৷ রুচিকার আইনজীবী এই রায়কে বলেছেন, ঐতিহাসিক৷ বিচার ব্যবস্থার ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা বাড়বে৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন
তথ্যসূত্র: ডয়চে ভেলে/ ২৫-০৫-২০১০
No comments:
Post a Comment